বাকী দেওয়া বড় কষ্ট, বাকীতে হয় সম্পর্ক নষ্ট

চিতলমারী প্রতিনিধি

আপডেট : ১১:১৪ পিএম, রোববার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ | ৫৮৭

‘কি বলব ভাইজান। বাকী দেওয়া বড় কষ্ট, বাকীতে হয় সম্পর্ক নষ্ট। এ গুলো বলি, তাও মানুষ শুনতে চায় না। বুঝতেও চায় না। এরপরও বাকী নেয়, বাকী চায়। তাই বাধ্য হয়ে মনের কষ্টে এ কঠিন কথা গুলো লিখে ঝুলিয়ে রেখেছি। তারপরও কিছু খরিদ্দার বাকী চায়।’ রোববার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে এভাবেই মনের ভাষা ব্যক্ত করছিলেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা সদর বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. হাসান শিকদার (৫০)।

হাসান শিকদার উপজেলার সুরশাইল গ্রামের মৃত রাহেন উদ্দিন শিকদারের ছেলে। মা স্বরূপজান, স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে ৬ সদস্যর পরিবার তাঁর। মাদ্রসায় লেখাপড়া শেষ করে উপজেলা সদর বাজারে মাদ্রাসা মার্কেটের একটি দোকান ভাড়া নিয়ে মুদি মালের ব্যবসা শুরু করেন।

হাসান শিকদার বলেন, আজ প্রায় ১৮ বছর ধরে ব্যবসা করছি। শতাধিক খরিদ্দারের কাছে প্রায় তিন লাখ টাকা বাকী পড়েছে। বাকি নিয়ে আর কেউ দোকানের ধারে-কাছেও ঘেঁষে না। এমনকি দোকানের সামনে দিয়েও হাটে না। অথচ তিনটি এনজিও আমার কাছে টাকা পেত। করোনাকালিন সময়ে সম্পর্ক ঠিক রাখার জন্য নিজের ৬৮ শতক জমি বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেছি। কিন্তু মানুষ আমার টাকা দেয় না। বর্তমানে দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল দিয়ে প্রতিমাসে দোকান খরচ আছে প্রায় ৬ হাজার টাকা। এছাড়া দুই বাপ-বেটা সমান হারে দোকানের পিছনে খাটি। তাও খরিদ্দারের মায়া হয় না। আবারও বাকী চায়। তাই বাধ্য হয়ে ওই কঠিন কথা গুলো লিখে লেমেনেটিং করে ঝুলিয়ে রেখেছি। এরপরও কিছু মানুষ বাকী চায়। তখন লজ্জাশরম ভুলে তাঁদের ওটি নামিয়ে পড়ে শুনাই। অনেকেই শুনে চলে যান। ও গুলো শুনে আর কেউ বাকী চায় না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত