সরকার ও বিত্তবানদের সাহায্যে চিকিৎসা করাতে চান অসহায় বাবা-মা

মোল্লাহাটে টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় বাড়িতে ভূগছে শিশু আরাফাত

শেখ শাহিনুর ইসলাম শাহিন,মোল্লাহাট

আপডেট : ০৮:৫৫ পিএম, শনিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২২ | ৪৬৫

আরাফাত মোল্লা

মোল্লাহাটের চুনখোলা গ্রামের ভ্যান চালক বাবা মোঃ কবির মোল্লার অর্থের অভাবে প্রায় ৩ বছরের অধিককাল চিকিৎসা সংকটে বাড়িতে ভুগছে শিশু আরাফাত মোল্লা। সুস্থভাবে জন্ম নেয়ার পর মাত্র আড়াই মাস বয়সে নিউমোনিয়া (হাইড্রোক্যাফালাস) রোগে আক্রান্ত হয় শিশুটি।



শিশু আরাফাত মোল্লার বয়স এখন ৩ বছর ৪ মাস। যে, শিশু এখন খেলবে ও দৌড়াবে, সে আজ মাথার ওজন নিয়ে দাড়াতে এমনকি বসতেও পারছে না। ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে মাথার ওজন ও আকার। এই বয়সে মাথার ওজন থাকার কথা ২ কেজি। কিন্তু এই শিশুটির মাথার ওজন এখন দশ কেজির উপরে। মাথায় পানি জমার কারণে শিশুটির এই অবস্থা। জন্মের আড়াই মাস বয়সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়, পরিবার শুরু করে তার চিকিৎসা। মোল্লাহাট, গোপালগঞ্জ ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে তার চিকিৎসা। কোন চিকিৎসায় কাজে আসেনি বরং ক্রমান্বয়ে তার অসুস্থতা বেড়েই চলছে।

আরাফাত বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার চুনখোলা গ্রামের ভ্যান চালক কবির মোল্লার ছেলে। ভ্যান চালক পিতার ৪ সন্তানের মধ্যে আরাফাত তৃতীয় সন্তান। ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন করছে তা দিয়েই ৮ জনের সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে কবির মোল্লা। এরই মধ্যে তিন বছর ধরে ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বশান্ত ঐ ভ্যান চালক। অর্থের অভাবে এই শিশুর চিকিৎসা এখন বন্ধ হয়ে গেছে।



উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, শিশুটি নিউমোনিয়ায় (হাইড্রোক্যাফালাস) আক্রান্ত হয়ে মাথায় পানি জমে মাথা ফুলে গেছে। ঢাকা (বিএসএমএমইউ) বা উন্নত দেশে চিকিৎসা করালে শিশুটি সুস্থ্য হতে পারে। এখন যদি চিকিৎসা না করায় আস্তে আস্তে তার অবস্থা খারাপ হতে থাকবে।


শিশুটির পিতা মোঃ কবির মোল্লা বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে জানান, তার ৪ সন্তানের মধ্যে আরাফাত তৃতীয়, এছাড়া নিজেরা (স্বামী-স্ত্রী) ও বৃদ্ধা মা-সহ ৭/৮ জনের সংসার অনেক কষ্টে চলে এক মাত্র ভ্যান চালিয়ে। তিনিও চান অন্য শিশুদের মত তার সন্তান সুস্থ্য হয়ে উঠুক। কিন্তু কেবল টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তাই তিনি সরকার ও বিত্তবানদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছেন, যাতে তার শিশু পুত্রকে চিকিৎসা করাতে পারেন।


শিশুটির মা মুর্শিদা বেগম বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, জন্মের আড়াই মাস বয়সে আমার আদরের ছেলে আরাফাত অসুস্থ। এর পর থেকে তার মাথার ওজন বাড়তে থাকে। শরীর থেকে মাথার ওজন বেশী হওয়ায় অধিকাংশ সময় সে বিছানায় শুয়ে থাকে।


এলাকাবাসী বলেন, শিশুটির চিকিৎসা করা সম্ভব যদি সরকার এবং সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসে। শিশুটি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পেয়ে দ্রæত সুস্থ হয়ে উঠবে এমন প্রত্যাশা সবার।


মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদ হোসেন বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, শিশুটির চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। আমরা সাধ্য অনুসারে চেষ্টা করবো, সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে শিশুটির চিকিৎসা করা সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত