মোরেলগঞ্জে জেলেদের দুর্বিসহ জীবন, বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবী

মেহেদী হাসান লিপন, মোরেলগঞ্জ

আপডেট : ১২:০৩ এএম, শনিবার, ৪ জুন ২০২২ | ৪৬৪

মোরেলগঞ্জে বিকল্প কর্মসংস্থানের অভাবে উপজেলা জেলে পল্লীর জেলেরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকার কারনে তারা এ মানবেতর জীবন যাপন করছে। পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিসহ জীবন কাটছে তাদের।

সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, ২০মে থেকে ২৩ জুলাই ৬৫ দিন সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। এ কারনে চিংড়াখালী ইউনিয়নের পূর্ব চন্ডিপুর পশুরি পাড়া জেলে পল্লীর শত শত পরিবার অলস সময় কাটাচ্ছে। খেয়ে না খেয়ে দিনানিপাত করছেন তারা। সরকারীভাবে খাদ্য সহায়তা পেলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। এ পল্লীর সাড়ে ৩শ’ পরিবার অবকাশকালীন সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবী জানিয়েছেন। এ গ্রামটির অধিকাংশ জুড়ে জেলে পরিবারের বসবাস। সাগরে মাছ ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে এ পল্লীর লোকজন। সারা বছরই মহাজনেদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা দাদন নিয়ে সাগরে মাছ ধরে । দাদনকৃত আড়তদারদের কাছে বিক্রী করতে হয় তাদের মাছ। মহাজনদের অগ্রিম টাকার বিপরীতে বড় অংশের লভ্যাংশ দিতে হয়। পরবর্তীতে সামন্যতম আয় থেকে সারা বছর সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এ গ্রামের সাগর নির্ভরশীল জেলেদের ছোট বড় ১৫-২০ টি ট্রলার আছে। প্রতিটি ট্রলারে ২০থেকে ৪০জন শ্রমিক কাজ করে। এ থেকে শ্রমিকদের পরিবার নির্বাহ হয়। কোন কোন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা, জলোচ্ছাস প্রতিকুলতায় মাছ না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয় তাদের। বছরের বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই মহাজনদের সুদের টাকার বেড়াজালে আটকে যেতে হয় এসব জেলেদের।

জেলে মোকছেদ বেপারী, চান মিয়া জানায়, সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকাকালীর অবকাশকালীন সময়ে দু’বছর পূর্ব থেকে সরকারীভাবে মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ২কিস্তিতে জন প্রতি ৮৬ কেজি চাল সুবিধা পান। এ সামান্যতম চালে পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে তাদের খুবই কষ্ট হয়। একদিকে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, অন্যদিকে একমাত্র আয়ের উৎস বন্ধ কিভাবে চলবে তাদের সংসার। অবকাশকালীন সময়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সুদমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থার মাধ্যমে যা থেকে নিজ বাড়ীতে হাঁস মুরগী পালন, পুকুরে মাছ চাষ ও আধুনিক প্রযুক্তিতে সব্জী উৎপাদন করে এ জেলে পেশার মানুষের সংসারের চাকা সচল করা সম্ভব। পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা বৃদ্ধি করার দাবী জানিয়েছেন তারা।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা থেকে বিরতকারী জেলেদের অবকাশকালীন সময়ে এ উপজেলার প্রায় ৩ হাজার জেলেদেরকে জন প্রতি ৮৬ কেজি করে চাল খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে। জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান ও দাবী দাওয়ার বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত