মোংলায় পশুর নদীতে যাত্রী বোঝাই ট্রলার ডুবিঃ নিহত-১

মোংলা প্রতিনিধি

আপডেট : ১১:০৩ পিএম, রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০১৯ | ৭৫৫

মোংলায় পশুর নদীর লাউডুব খেয়াঘাট থেকে পাড়া-পড়ারের সময় যাত্রী বাহী ট্রলার ডুবিতে একজনের লাশ উদ্ধার করেছে কোষ্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দাকোপের লাউডুব ঘাট থেকে ছেড়ে আসা যাত্রী বোঝাই ট্রলারটি নদী খননের ড্রেজারের সাথে ধাক্কা লেগে নদীর মাছখানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এসময় অন্যান্য যাত্রীরা সাতার কেটে নদীর তীরে উঠতে পারলেও এতে কয়েকজন যাত্রী নিখোজ রয়েছে বলেও জানায় উদ্ধারকর্মীরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪টি ডুবুরী দলের উদ্ধার অভিযানে অন্য কাউকে খুজে পায়নী বলেও জানায় জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মাসুদ সরদার। তবে ডুবন্ত ট্রলারটিতে প্রায় শতাধিকেরও বেশী যাত্রী ছিল বলে জানিয়েছে ওই ট্রলার থেকে সাতরিয়ে কুলে উঠে যাত্রীরা। নিখোঁজদের সন্ধানে সকাল ৯টা থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করে নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

কোষ্টগার্ডের অপারেশন কর্মকর্তা লে. ইফতেখার মাহমুদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খুলনার দাকোপ উপজেলার লাউডোব খেয়া ঘাট থেকে যাত্রী বোঝাই করে মোংলা বন্দরের শিল্পাঞ্চলের হোলসিম খেয়া ঘাটে আসাতে ছিল। এসময় নদীর ¯্রােতের টানে ট্রলারটি পশুর নদীতে খনন কাজে ব্যাবহৃত ড্রেজারের সাথে ধাক্কা লাগে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ট্রলারটি একদিকে কাত হলে যাত্রীরা দিগবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে এবং অধিক সংখ্যাক যাত্রী নদীতে লাফিয়ে পরে। কিছুক্ষনের মধ্যেই ট্রলারটি ড্রেজারের নিচে চলে যায়। তাৎক্ষনিক কোন কোন যাত্রী সাতরিয়ে নদীর তীরে উঠে গেলেও সুন্দর বিশ্বাস (৫০) নামের এক যাত্রী মারা যায়। তার বাড়ী খুলনার জেলার দাকোপ উপজেলার বাজুয়া গ্রামে। ট্রলারে থাকা আহত, ও নিখোঁজ যাত্রীদের বাড়ী দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। এ সকল লোকজন মোংলার বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায় চাকুরি করে।

জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মাসুদ সরদার বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানায়, ট্রলার ডুবির ঘটনায় আরও কেউ নিখোঁজ হতে পারে এমন সেন্দেহে কোষ্টগার্ড ও তাদের ডুবুরী দল আশপাশের এলাকায় তল্লাশী অভিযান অব্যহত রেখেছেন। তবে এখনো কয়েকজন যাত্রী নিখোঁজ থাকতে পারে বলে এলাকাবাসী ধারনা করছেন। ঘটনার পর থেকে কোষ্টগার্ড ডুবরি দল, ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ও পুলিশ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এ দূর্ঘনার পর সকাল ৯ টা থেকে তাদের দুটি ইউনিটসহ অন্যান্য সদস্যরা কোস্টগার্ডের সঙ্গে সমন্বয় করেই উদ্ধার অভিযান চালচ্ছেন।

এ দিকে যাত্রীদের অভিযোগ-একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র এ খেয়াঘাটটি ইজারা নিয়ে অদক্ষ চালক দিয়ে পরিচালনা করছে। ডুবে যাওয়া ট্রলারটির চালকের দায়িত্বে ছিলো এক কিশোর। যে কারনে এ দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবির ঘটনার পর সহকারী পুলিশ সুপার অসিফ ইকবাল ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন। তবে এ ঘটনায় কতজন যাত্রী নিখোঁজ হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। তবে ডুবন্ত ট্রলারটি উদ্ধার করে থানার হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া ট্রলার ডুবির এ ঘটনায় আরও একাধিক যাত্রী নিখোঁজ থাকতে পারে বলে তিনি সন্দেহ করছেন। তবে যাত্রীদের বেশিভাগই খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার বাসিন্দা এবং ট্রলার ডুবির ঘটনা এখনও অনেকের পরিবারই জানেন না বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত