জেলে পল্লীতে ছড়িয়ে পড়ছে আতংক

সুন্দরবনে নতুন করে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে বনদস্যু নয়ন বাহিনী

মাসুদ রানা,মোংলা

আপডেট : ০৯:৪১ পিএম, শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ | ৩১৮

সুন্দরবনে আবারো শুরু হয়েছে বনদস্যুদের তৎপড়তা। মুক্তিপণের জন্য করছে জেলে অপহরণ, জেলে বহরে হামলা মারধর ও লুটপাট। নয়ন বাহিনী নামের ১৭ সদস্যের একটি দস্যুগ্রুপ এরই মধ্যে ১১ জেলেকে অপহরণ করে দস্যু বাহিনী। ৭দিন পর মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পায় তারা। ফলে জেলেদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। দ্রুত দস্যুদের নির্মুল করতে না পারলে দিন দিন বাড়তে থাকবে উপকুলে দস্যুদের রাজত্ব। ফলে সুন্দরবন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে বনের উপর নির্ভরশীল জেলে মহাজনরা। প্রশাসন বলছে, জেলেদের নিরাপত্তা ও সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করতে র‌্যাব, কোস্টগার্ড ও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


পুলিশ সুত্রে জানায়, সর্ব শেষ ৬টি বাহিনীর ৫৪ জন বনদস্যুর আত্নসমর্পনের মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ৪০ বছরের গোটা সুন্দরবনের জেলেদের উপর দস্যুতার সমাপ্তি ঘটে। আর সেই আত্নসমর্পনের মধ্য দিয়ে ২০১৮ পয়েলা নভেম্বর সুন্দরবনকে দস্যু মুক্ত ঘোষনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রত্যাশা ছিলো সুন্দরবনে থাকবেনা ভয়ংকর দস্যুদের নিষ্ঠুরতা। জেলেরা থাকবে নিরাপদ আর তাদের পরিবার থাকবে নিশ্চিন্তে। এমন প্রত্যাশা কে চ্যালেঞ্জ দিয়ে আবারও সুন্দরবনে দস্যুতা শুরু করেছে নতুন আবির্ভাব হওয়া নয়ন বাহিনী। নতুন করে তাদের কাছে জিম্মি হচ্ছে জেলেরা। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এখনই নির্মুল করতে না পারলে আবারও তৈরী হতে হতে পারে নতুন নতুন বাহিনী।

চলতি মাসের ১৩ ডিসেম্বর রাতে বনের হারবাড়িয়ার চরাপুটিয়া, কলামুলো, তাম্বল বুনিয়া ও হরমল খাল থেকে পৃথক ১১ জন জেলেকে অপহরন করে দস্যু নয়ন বাহিনীর সদস্যরা, মুক্তিপণ চাওয়া হয় জনপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা। ৭ দিন পর দস্যুদের জিম্মি দশা থেকে ২১ ডিসেম্বর প্রশাসনের অভিযানের মুখে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পায় জেলেরা। প্রশাসনের তোপের মুখে ২৬ ডিসেম্বর ভোর রাতে চাঁদপাই রেঞ্জের মৃগামারী এলাকা থেকে ৩ বন দস্যুকে গ্রেফতার করে মোংলা থানা পুলিশ। উদ্ধার করা আগ্নেয়াস্ত্র সহ দস্যুতার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মালামাল। নতুন করে সুন্দরবনে বনদস্যু প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় জেলে পরিবারের মাঝে এখন চলছে দস্যু আতংক। মাছ ও কাকড়া আহরণে যাওয়া জেলেদের মধ্যে অনেকে বন ছেড়েও দিয়েছে ।

মোংলা-রামপাল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আসিফ ইকবাল বাগেরহাট টুয়েন্টিফোরকে বলেন, সুন্দরবনে দস্যু মুক্ত রাখতে অভিযান চলমান রেখেছেন পুলিশ সহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা, জেলেদের নিরাপত্তা ও বনদস্যুদের নির্মুল করতে যতক্ষন না পারবে, ততক্ষন তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

র‌্যাবের কাছে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের সর্ব মোট ৩২টি বাহিনীর প্রধান সহ ৩২৪ জন দস্যু আত্নসমর্পন করে। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪২৬টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত