স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও চিতলমারী বধ্যভূমি অরক্ষিত 

এস এস সাগর, চিতলমারী

আপডেট : ০৭:৪৮ পিএম, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০১৯ | ২৭১২

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৮ বছর পার হলেও চিতলমারীর বধ্যভূমিটি এখনো অরক্ষিত রয়েছে। উপজলোর চরবানিয়ারী ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের একটি মাঠের মধ্যে আশ্রয় নেওয়া অসংখ্য নীরিহ লোককে যুদ্ধের সময়ে পাকহানাদার বাহিনী গুলি চালিয়ে হত্যা করে। বধ্যভূমি হিসেবে চিহ্ণিত ঐ স্থানটি যথাযত ভাবে সংরণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও এলাকাবাসি।

প্রবীনরা বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ১৯৭১ সালের বাংলা ৫ আষাঢ় বেলা ১১টার দিকে বলেশ্বর নদী পথে গানবোট যোগে পাকসেনারা ও তাদের দোসররা মিলে এলাকায় প্রবেশের পথে নির্বিচারে গুলি চালায়। এদিন তারা এলাকায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। গুলরি শব্দে লোকজন প্রাণভয়ে দিগ্বিদিক পালাতে থাকে। এ সময়ে আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আশ্রয় নেওয়া লোকজন এবং অনেক স্থানীয় গ্রামবাসী খলিশাখালী গ্রামের মাঠের মধ্যে হোগলা বন ও পাটেেত লুকিয়ে থাকার জন্য আশ্রয় নেয়। পরে পাকিস্তানি সেনারা তাদের দেখতে পেয়ে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ওইসব লোকজনকে হত্যা করে। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হলেও এ স্থানটি যথাযথ ভাবে সংরণ করা হয়নি।

এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুনীল মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, যুদ্ধের সময়ে এখানে প্রায় ২ শতাধিক নিরীহ লোককে পাকবাহিনী হত্যা করে। এ স্থানটিকে তিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প থেকে দ্রুত সংরক্ষণ ও এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান।

খলিশাখালী গ্রামের শতবর্ষী বৃদ্ধা প্রমীলা মন্ডল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, তিনি সেদিনের হত্যাযজ্ঞের সেই ভয়াবহতা প্রত্য করেছেন। মাঠের ভেতর অসংখ্য মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এখানকার মাঠের জমিতে মাটি খুঁড়ে অনেক মানুষের হাড় ও মাথার খুলি পাওয়া গেছে।

উপজেলা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার মো. আবু তালেব শেখ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ঐ দিন বাগেরহাট থেকে কুখ্যাত রাজাকার রজ্জব আলী ফকিরের নেতৃত্বে পাকিস্তানি বাহিনী এলাকায় প্রবেশ করে বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগসহ গণহত্যা চালায়।

চিতলমারী উপজেলার নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, যুদ্ধের সময়ে এখানে যাদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের অধিকাংশই আশপাশের জেলা থেকে এখানে আশ্রয় নিতে এসেছিল। অনেকের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

তবে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু সাঈদ বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, বধ্যভূমির ওই স্থানটি যথাযথভাবে সংরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহায়তায় বাস্তবায়ন করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত