কমিটি গঠন নিয়ে

মোরেলগঞ্জে অশান্ত আওয়ামী রাজনীতি

মশিউর রহমান মাসুম, মোরেলগঞ্জ

আপডেট : ০৭:১৫ পিএম, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩ | ৩৩৬

প্রতিকী ছবি
মোরেলগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে কমিটি গঠন নিয়ে আওয়ামী রাজনীতি বেশ অশান্ত হয়ে উঠেছে। নতুন করে চাঙ্গা হচ্ছে দলীয় গ্রুপিং, বিরোধ ও অন্ত:কলহ। ইউনিয়নও ওয়ার্ড কমিটিতে দলীয় পদ পাওয়া নিয়ে নিজেরা লিপ্ত হচ্ছেন সংঘর্ষে। ভাংচুর, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটছে। নির্দিধায় রক্ত ঝরাচ্ছেন নিজ দলের নেতা কর্মীদের। বিএনপির নেতা ও জামায়াত অনুসারীদের নেতৃত্বে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।


বহিরাগতদের দলে টেনে কমিটি গঠনের অভিযোগে ইতোমধ্যে হোগলাবুনিয়া ও মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নে মারপিট, ভাংচুর, ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছেন ১৫-২০ জন নেতাকর্মী। দলের মধ্যে বিরাজ করছে উত্তেজনা। কয়েকটি ইউনিয়নে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছেন চেয়ারম্যানরা।


হোগলাবুনিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আকরামুজ্জামান বলেন, যে সকল লোক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিরোধীতা কারেছে এমন ব্যাক্তি ও সরকারি চাকুরীতে থাকা ব্যাক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ত্যাগী ও প্রকৃত আওয়ামী পরিবারের কেউ ওই কমিটিতে নেই। এটা স্বার্থ হাসিলের পকেট কমিটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত একজন তরুণ চেয়ারম্যান বলেন, ‘ঘরের মধ্যে বারান্দা দিয়ে আওয়ামী লীগে অশান্তি প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে’।


বণগ্রাম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রিপন দাস বলেন, নবগঠিত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটিতে পরীক্ষীত নেতাকর্মী ও জনগণের কোন সম্পৃক্ততা নেই। দল গোছানোর সময়টাতে শুরু হয়েছে মোরেলগঞ্জে আওয়ামী লীগ ধ্বংসের প্রক্রিয়া।
বলইবুনিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. শাজাহান আলী খান ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘জামায়াত বিএনপি পরিবারের লোকজন নিয়ে কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। এসব মেনে নেবনা। কমিটি গঠনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। বিতর্কীতদের নিয়ে ভবিষ্যতে সংকট মোকাবেলা করা যাবেনা’।


বহরবুনিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. রিপন তালুকদার বলেন, ঘরে বসে কমিটি করা হচ্ছে। এলাকায় কোন বৈঠক নেই। ২০০১ সালের দুর্ধর্ষ বিএনপি নেতা রুহুল আমীন ওরফে চান হাজীর নেতৃত্বে পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। ব্যাক্তি সার্থে গঠন করা এসব কমিটি আওয়ামী পরিবারের কেউ মেনে নিবেনা। এসব বিতর্কীত লোক দল থেকে বাদ না দিলে দ্বন্দ, সংঘাত বাড়বে। রক্ত ঝড়বে। এভাবে চলতে থাকলে দল ধ্বংস হবে।


উল্লেখ্য, গত ৯ মার্চ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ১৬টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চলছে আলোচনা, সমালোচনা। বিতর্কিত ব্যাক্তিদেরকে ইউনিয়ন কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও অনেক দলীয় নেতাকর্মী তিরস্কার করেছেন, নিন্দা জানিয়েছেন।


জিউধরা ও বহরবুনিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এসব বিষয়ে লিখিতভাবে জেলা আওয়ামী লীগের নিকট অভিযোগ দায়ের করেছেন। বহিরাগতদের বাদ দিয়ে প্রকৃত আওয়ামী পরিবারের নেতাদের নিয়ে কমিটি গঠনের দাবি করেছেন তারা।


এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এমদাদুল হক বলেন, বড় দল হিসেবে কিছু সমস্যা থাকবে। কিছু ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা কমিটির সভাপতি, এমপি সাহেব এলাকায় আসার পরে সেগুলোর সমাধান করা হবে।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
  • নির্বাচিত